ভোজনোৎসবে ভুরিভোজের ভিড়ে ক্ষুধার্তের খবর কে রাখে!
আজ বাংলা বর্ষের প্রথম দিন যাকে বলা বাংলা নববর্ষ। বাংলা নববর্ষ বাঙালীদের এক মহাউৎসবের দিন। প্রতি বছর এই দিনটি উদযাপন করা হয় ঐতিহ্যগতভাবে ভারতবর্ষে। এই দিনে বাঙালী জাতি বিশেষ করে সারা ভারতবর্ষের বাঙালীদের কাছে বাংলা নববর্ষের সংস্কৃতির ও ঐতিহ্য উদযাপন করার সবচেয়ে বড় উৎসহ হল বাংলা নববর্ষ। তাই প্রতি বছরই বাঙালী জাতি সব বিভেদ ভুলে বাংলা নতুন বছরকে নিয়ে নানা ধরনের উৎসব উদযাপন করে থাকে। অপ্রাপ্তি ভুলে আনন্দে মেতে ওঠে বাঙালী, রঙ রঙ ছুঁয়ে যায় সারা দেশ।সারা দেশের মানুষ বাংলা নববর্ষের আনন্দে মেতে থাকে নতুন পোষাকে আর মজার মজার খাবারে। পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্য হলো পান্তা ভাত আর ইলিশ ভাজা, সামর্থ্যবানরা বছরে একদিন মানে পহেলা বৈশাখের দিন গরিবের পান্তা খেয়ে আনন্দ-উৎসব করে। পান্তা অনেকের নিত্যদিনের খাবার। তাই পান্তা একশ্রেণীর আনন্দ আর আরেক শ্রেণীর কষ্ট। মানুষ একই পৃথিবীতে একই খাবার খায়, সবকিছু এক হলেও শুধু অনুভুতিই ভিন্ন। এই দুনিয়ার কেউ খেয়ে শেষ করতে পারেনা বলে ফেলে দেয় আবার কেউ ঐ ফেলে দেয়া খাবার কুঁড়িয়ে খায়, অথচ সবাই মানুষ, একই উপাদানের তৈরি তবুও কত দূরত্ব; কোন দিনই এক শ্রেণী আরেক শ্রেণীর নাগাল পাবে না। যতদিন দুনিয়া থাকবে তত দিন এই দূরত্ব বজায় থাকবে। কিন্তু যে মানুষগুলো একতরফা ভোগ করে গেল, যাচ্ছে বা যাবে আর যে মানুষগুলো পৃথিবীর কাছ থেকে কিছুই পেলনা পরে ছিল, আছে এবং থাকবে পথে পথে। তাদের কি কিছুই পাওয়ার অধিকার নেই এই সাম্যহীন পৃথিবিতে?
আরো জানতে ক্লিক করুন
পহেলা বৈশাখে পান্তা ভাত আর ইলিশ ভাজার কথা কবিতা গল্পে বলা হলেও ঘরে ঘরে রান্না হয়ে থাকে কোরমা পোলাও এবং নানা রকম মজাদার খাবার। আবার এমন অনেক ঘর আছে যে ঘরে রান্না হয় শুধুই সাদা। তাদের খবর কে রাখে, তারা থাকে সবার আসে-পাশে। ভাল-মন্দ খাবার তাদের ভাগ্যে কখনও জুটেনা। তাদের শুধু দেখে যেতে হয় ভোজনোৎসবের মজাদার খাবার। আরো একশ্রেণীর মানুষ আছে তাদের কারো কারো ঘরে সাদা ভাত রান্না করার সাধ্যও অনেক সময় হয় না। আমার কথা হয়ত বিশ্বাসযোগ্যতা পাবেনা অনেকের কাছে, তবুও দৃঢ়ভাবে বলবো এটা বাস্তব এবং সত্য। নিম্নমধ্যবিত্ত অনেক পরিবারের অবস্থা কতটা করুণ আর কতটা নির্মম যারা ভুক্তভোগী তারা ছাড়া অন্য কেউ ভাবতে পারবে না বিশ্বাস তো দূরের কথা। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ তারা হাত পাততে পারেনা, বলতে পারেনা অবস্থার কথা। তাদের আত্মসম্মান, আত্মমর্যাদা, লজ্জাবোধ এবং ব্যক্তিত্ব কতটা প্রখোর কতটা টনটনে তা উপলব্ধি করার মানষিকতা নিয়ে ভাবা ছাড়া উপলব্ধি করতে পারবেনা। তারা শুধু দেখেই তৃপ্ত থাকে অতৃপ্ততা পৃথিবীকে কখনো বুঝতে দেয়না।
প্রতি বছর ঘুরে ঘুরে আসে পহেলা বৈশাখ বাঙালীদের ঘরে ঘরে হয় ভোজনোৎসব শুধু ক্ষুধার্তরাই থেকে যায় ক্ষুধার্ত। ভুরি ভোজনের ভোজনোৎসবের ভিড়ে ক্ষুধার্তদের ক্ষুধার জ্বালার খবর কে রাখে!
পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে জানাই বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা
No comments:
Post a Comment