Pages

অরণ্য এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে; তাই প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ ভারসাম্যহীন







অরণ্য এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে; তাই প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ ভারসাম্যহীন
অরণ্য এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে; তাই প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ ভারসাম্যহীন

এমন এক যুগ ছিল, যে যুগে মানুষ বনে-জঙ্গলে বাসা বেঁধে কাটিয়ে ছিল জীবন ঘন অরণ্যে আচ্ছাদিত ছিল পৃথিবীজীবন ধরনের প্রধান উপকরণ ছিল বনের ফল-মূল; তারপর কোন এক শুভলগ্নে মানুষ নতুন জীবনবোধের অধিকারী হয়অরণ্য কেটে বসত গড়ে। মাটিতে ফসল বুনে শস্যকণায় জীবন ধারণে অভ্যস্ত হয় ঘর বানাতে শুরু করে গাছ কেটে, তখন থেকে অরণ্যে উপর মানুষের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় এবং উজার হতে শুরু করে বনভূমি সেই যে শুরু হয়েছে আর থামেনি বরং বেড়েই চলেছে অবাধে বনাঞ্চল ধ্বংস, ফলে ধীরে ধীরে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশফলশ্রুতিতে আজ মানবজীবনে দেখা দেয় নানা বিপর্যয় কারণ মানুষ তো প্রকৃতির সাথে একসূত্রে গাঁথা
বলা যায় একই টাকার এপিঠ-ওপিঠ গাছ আমাদের খাদ্য,  আশ্রয়, ঔষধ, জ্বালানি ও নির্মল পরিবেশ দেয় পরিবেশ দূষণমুক্ত করতে উদ্ভিদ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে বায়ুমন্ডলকে স্বাস্থ্যকর রাখতে এক বিরাট অবদানের প্রতীক গাছ বায়ুতে অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ যথাক্রমে ২০% ও ০.০০৮% থাকা বাঞ্ছনীয় কিন্তু বায়ুতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ  ০.০০৮%  এর বেশি হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এর জন্য কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণের স্থিতিশীলতা অত্যন্ত প্রয়োজন তাই সুস্থ জীবনের জন্য চাই পরিবেশ, আর সুস্থ পরিবেশের জন্য গাছের ভূমিকা অনস্বীকার্যঅথচ যান্ত্রিক সভ্যতা ও শিল্প যুগ আমাদের সুস্থ জগৎ থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় ভারসাম্যতা কেড়ে নিয়েছে, দিয়েছে ভারসাম্যহীনতাআধুনিক পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে গাছ-পালা, পশু-পাখি, পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী ইত্যাদি প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখে, আবার প্রয়োজনের চেয়ে অতিমাত্রায় কম হলে প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে। একটি দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য থাকে যখন সে দেশে ভূমির কমপক্ষে ২৫% বনভূমি থাকে বাংলাদেশের বনভূমির পরিমাণ ৬ কোটি ৮ লাখ একর যা দেশের আয়তন এর তুলনায় ১৭.০৯%।  কিন্তু বিভিন্ন কারণে আজ আমাদের দেশে বনভূমি এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা প্রতি হুমকি স্বরূপ ১৯৯৬ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায় আমাদের দেশে ২ কোটি ৭৮ লাখ একর বৃক্ষাচ্ছাদিত বনভূমি আছে যা দেশের আয়তনের তুলনায় প্রকৃত বনভূমি ৭.৭০% মাত্র দেশের বনভূমি যে হারে উজার হচ্ছে সেই হারেই বাড়ছে জনসংখ্যা। জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত সমস্যার কারণেও বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে

বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যায়

বর্ধিত জনসংখ্যার চাহিদা মেটানোর জন্য বনজ সম্পদ ক্রমেই কমে আসছেপাহাড়ি এলাকায় আদিবাসীদের জুম চাষ, শিল্পায়ন ও নগরায়নের জন্য বনভূমি জবর-দখল, আসবাবপত্র বৃদ্ধি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে গৃহনির্মাণের জন্য কাঠের ব্যবহার, অবৈধভাবে কাঠের পাচার, রান্না-বান্নার কাজে কাঠের যথেচ্ছা ব্যবহার, ইটের ভাটায় জ্বালানী হিসেবে কাঠের ব্যাপক ব্যবহার ইত্যাদি কারণে আজ আমাদের দেশের বনজ সম্পদের বড় বেশি অভাব দেখা দিয়েছে আর এ কারণেই কাঠ, কয়লা, তেল, গ্যাস ইত্যাদি পোড়ানোর ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রীনহাউস প্রক্রিয়ায় ওজনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সূর্যের তেজস্ক্রিয় রশ্মি সরাসরি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করছে এর ফলে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বাভাবিক অবস্থা বায়ুতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ০.০৩ ভাগ। কার্বন-ডাই-অক্সাইড তাপ ধরে রাখে বলে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যায় জনসংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি, বনভূমির হ্রাস এবং খনিজ জ্বালানির অধিক ব্যবহারের ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে ফলশ্রুতিতে দেশে খরা, অনাবৃষ্টি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, তুষারপাত ও ভূমিধস নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত করাএমনিভাবে যদি দিনের পর দিন চলতে থাকে তাহলে এদেশ মরুভূমি হতে আর বেশী দেরী হবে না, বঙ্গোপসাগরের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাবে না। উড়িয়ে দেয়া যাবে না ক্যান্সার, হৃদরোগ, আলসার, টিউমার, চর্মরোগ ইত্যাদি রোগের প্রভাব একারণেই ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার সমুদ্রের গভীরতা কমে যাওয়ার ফলে বন্যা হচ্ছে। পরিবেশ দূষণমুক্ত ও বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে একমাত্র গাছে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
অরণ্য এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে; তাই প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ ভারসাম্যহীন




বর্তমানে আমাদের দেশে যেভাবে গাছপালা উজাড় হচ্ছে সেভাবেই বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা। তাতে  ২০৩০ সালে গড়ে ৮ ডিগ্রী থেকে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়বে অর্থাৎ আমাদের দেশের গড় তাপমাত্রা ৩৫-৩৬ ডিগ্রী থেকে বেড়ে ৪৫ডিগ্রী সেলসিয়াস দাঁড়াবে। যা আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা বড় ধরনের হুমকি। এই প্রেক্ষিতে বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে এখনি আমাদের অনুভব করতে হবে বনায়নের অর্থাৎ গাছের প্রয়োজনীয়তা। বৃক্ষরোপণ করেই ভূমিধস রোধ করা, মাটির জৈবপদার্থ উৎপাদন বৃদ্ধি করে উর্বরতা বৃদ্ধি করা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া। দেশ মরুভূমি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা। ভূ-নিম্নস্থ পানির পরিমাণ বৃদ্ধি এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের জন্য গাছপালা সংরক্ষণ এবং রোপণ করে আজ আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিকের নাগরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।

গাছের ফল মানব দেহের পুষ্টি জোগানো অন্যতম উৎস

মানুষের খাদ্য ও ঔষধের অন্যতম প্রধান উৎস গাছ। গাছের ফল মানব দেহের পুষ্টি জোগানো অন্যতম উৎস। গাছ যেমন সুস্বাদু ফল দান করে তেমনি পৃথিবীকে স্নিগ্ধ রাখে, বাতাসকে পরিশীলিত করে। গাছ কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস গ্রহণ করে পৃথিবীকে বিষমুক্ত করে, আবার অক্সিজেন ত্যাগ করে জীবকুলের বাঁচার পথ সুগম করে। তাই দেশ তথা নিজেকে (অর্থাৎ প্রতিটি মানুষই নিজেকে) বাঁচাতে হলে বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণের বহুমুখী প্রকল্প হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়িত করতে হবে। যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা একান্ত জরুরী তা হল

১।  সর্বক্ষেত্রে জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানো বন্ধ করতে হবে। বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কেরোসিন, পেট্রোল,    ডিজেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে।

২।  দেশে-বিদেশে বনজসম্পদ পাচার বন্ধ করার জন্য অসাধু চোরাচালানকারীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করে     বনজ সম্পদ রক্ষা করতে হবে।

৩।  আসবাবপত্র তৈরির ক্ষেত্রে কাঠের বিকল্প লোহা ও প্লাস্টিকের উপর নির্ভরতা বাড়াতে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে।

৪।  পাহাড়ি এলাকা গাছ কেটে জুম চাষ করা বন্ধ করতে হবে। গাছ না কেটে যেসব ফসল ফলানো যায় সে সম্পর্কে জুমচাষিদের উৎসাহিত করতে হবে।

৫।  গাছের প্রতি মানুষের ভালোবাসা গভীর করতে হবে এবং বর্তমানের গাছের অভাবে ক্ষতিকর প্রভাবগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে- স্বচ্ছভাবে।

৬।  গাছ লাভজনক ফসল, তা মানুষকে বুঝাতে হবে সেই সাথে উৎসাহিত করতে হবে, বিশেষ করে গ্রাম-গঞ্জে।

আমাদের পরনির্ভরশীল মনোভাব পরিহার করে স্বনির্ভরশীলতায় মনোব্রতি হতে হবে। হাত-পা গুটিয়ে সরকারের দিকে মুখ হা করে থেকে দেশ ও জাতির নয় আপনার আমার ভবিষ্যৎ বংশধরদের রক্ষা করা আজ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের জন্য রেখে যেতে হবে স্থায়ী বিষাক্তময় এক দুর্যোগপূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশ। যেখানে কোন সুস্থ মানব সন্তান জন্ম নিতে পারবে না। মাতৃগর্ভ থেকে অক্সিজেনের অভাব ভোগ করে পৃথিবীর বিষাক্ত আলোতেই ভূমিষ্ঠ হবে। তখন সুস্থতা তো দূরের কথা বেঁচে থাকাটাই কি দায় হবে না?  তাই প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায়, দায়ভার একা সরকারের দিকে ঢেলে না দিয়ে প্রতিটি নাগরিক যদি জাতির প্রতি সামান্যতম দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করে তাহলে দেশটা ৯৯% রক্ষা পাবে। বেঁচে যাবে জাতি এবং জাতীয় উত্তরসূরি, রক্ষা পাবে পৃথিবী।

প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ জাতীয় দুর্যোগে পরিণত হয়েছে

সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয় দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হলে সরকারের সহায়তায় জনগণকেই রুখতে হবে এবং জনগণই সরকারকে সহায়তা দানে বাধ্য করতে হবে। আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ জাতীয় দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। আমাদের দেশের লোকসংখ্যার তুলনায় ভূমির পরিমাণ খুবই কম, তাই বৃহৎ বনাঞ্চল সৃষ্টি করে দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা আদৌ সম্ভব নয়। এজন্য বসে থাকলে তো হবে না, বের করতে হবে বিকল্প পদ্ধতি, যাতে করে দেশে বনভূমির পরিমাণ ঠিক থাকে তেমনি বনায়নের মাধ্যমে বনের/গাছের সম্প্রসারণ হয়। বাংলাদেশে বনায়নের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, এর জন্য দরকার বৈচিত্রমুখী উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রমে উদ্যোগ গ্রহণ করা। নদীর কিনারায়, পাহাড়ের ঢালে, সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে, সড়কের পাশে, শহরের আইল্যান্ডে পাশাপাশি যদি বিল্ডিং-এর ছাদ এবং বারান্দাকে কাজে লাগায় তাহলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ঘাটতি অনেকটা পূরণ হবে বলেই মনে হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে কথা বলা যায়। এই ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকায় অবস্থিত রয়েছে গণবিল্ডিং। রাজধানীর প্রতিটা বিল্ডিং-এর ছাদে অন্তত (ছাদ উপযোগী) ৭-১০টা এবং প্রতিটা বারান্দায় ৩-৫টা (টবে) গাছ লাগানো থাকে। সেইসাথে প্রতিটি ছোট-বড় শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করে তাহলে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের হ্রসের সাথে অক্সিজেনের পরিমাণও একইভাবে বেড়ে যাবে। হয়ত কিছুটা তারতম্য হবে তবুও স্থিতিশীল অবস্থায় বিষাক্ত বাতাস পরিশীলিত করে স্নিগ্ধ লাগবে এদেশকে, বিশ্বভুবনকে। 
সরকারকে বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে আরও তৎপর হতে হবে। ঔষধি গাছের প্রচারে সাথে গাছের অভাবে ক্ষতিকর প্রভাব গুলো তোড়-জোড় গণপ্রচার করতে হবে। প্রতি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের বাসা-বাড়িতে ছাদ-বারান্দা এবং ঘরোয়া উপযোগী গাছ ঘরে লাগাতে উৎসাহিত (কিছুটা বাধ্য) করতে হবে। প্রতি বিল্ডিং-এই ছাদ-বারান্দা, বাড়ির আঙিনায় গাছ রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
অরণ্য এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে; তাই প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ ভারসাম্যহীন



ছোট বড় যেসব শহরে রাস্তায় আইল্যান্ড আছে সে আইল্যান্ডেগুলোতে দুই ধরনের গাছ লাগাতে যেতে পারে
যেসব গাছ অনেক উঁচু হয়ে থাকে সে জাতীয় গাছ লাগিয়ে নীচে সব্জি কিংবা ফুলের চাষ করা যেতে পারে। যেসব সবজি ছোট গাছ হয় যেমন- বেগুন, ঢেড়স, পেঁপে, কলা ইত্যাদি জাতীয় গাছ লাগানো যেতে পারে আইল্যান্ড সম্পূর্ণ বন্ধ না করে ওপরের অংশ চাষ করার জন্য ফুটপাতবাসী কিংবা ফুল চাষীদের কাছে লিজ দেওয়া যায় কিনা সে ব্যাপারে পরিকল্পনা করা যেতে পারে। এতে জাতি তিনভাবে উপকৃত হবে প্রাকৃতিক পরিবেশগত চাহিদা, খাদ্য এবং সৌন্দর্যগত চাহিদা পূরণ হবে, যদি সরকার সঠিকভাবে পরিকল্পনা মাফিক পরিচালনা করেন। এর জন্য সরকারকে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে, নার্সারি সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং কিছু গাছ বিনামূল্যে, গাছের প্রকারভেদ অনুসারে কিছু গাছ নামেমাত্র দামে বিক্রির ব্যবস্থা রাখতে হবে আমাদের দেশ দরিদ্র দেশ, এদেশের বেশিরভাগ জনগণই গরীব-দুঃখী। তারা পেটের ক্ষুধা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে তারা গাছ কিনে পয়সা খরচ করবেন কোথা থেকে, তাই পরিবেশ রক্ষায় সরকারের প্রয়োজনীয় গাছের ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ বিষাক্ত ও দূষিত হওয়ার কারণ জেনেও এখনো মানুষ সজাগ ও সচেতন হচ্ছে না দেশের এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে অনেক গাছ লাগানো যাবে। কিছু আইল্যান্ডে গাছ আছে সত্য কিন্তু সরকার গাছে প্রচারের তুলনায় সরকারের কাজের বাস্তবায়ন খুবই কম। সরকারের তৎপরতা যদি প্রখর হতো, তাহলে এতদিনে সমস্ত বাংলাদেশের না হোক  রাজধানী ঢাকা শহরের সমস্ত আইল্যান্ড গাছপূর্ণ থাকতো। এখনো শহরের ১০ ভাগের ৭ ভাগ ফাঁকা। তাই দেশের সরকারের প্রতি আবেদন বৃক্ষরোপণ আন্দোলন দ্রুত বাস্তবায়ন করুন। তবে একটা বিষয় প্রশংসনীয় বাসা-বাড়ি কিংবা রাস্তার ধারে গাছ পাওয়া না গেলেও এখন প্রায় অফিসে টেবিলের ফাঁকে ফাঁকে গাছ আছে যা পরিবেশ রক্ষায় বিরাট অবদান এবং এটা একটা শিক্ষনীয় বিষয়। তবে সরকারি অফিসগুলোতে তেমন একটা দেখা যায় না। অফিসে যাদের টেবিলের পাশে একটি গাছ আছে, তারা বাসায় শোয়ার ঘরে অন্তত একটি গাছ লাগান। আপনার পরিবেশ আপনি রক্ষা করুন এ মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের পরিবেশ সচেতন হতে হবে এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। কেননা মানুষ প্রকৃতিরই সন্তান, প্রকৃতির এই অঙ্গ।
মানুষের জীবনের সাথে সুখ-দুঃখ যেমন অনিবার্যভাবে জড়িত, সংসার সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনে প্রাকৃতিক দুর্যোগও তেমনি সংশ্লিষ্ট। এর সমস্ত কিছু অনিবার্য হলেও এথেকে রক্ষা আমাদের পেতেই হবে, এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন সরকারের এবং নাগরিকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা।

No comments:

Post a Comment