কোথা থেকে নেন আর কার কাছে দেন
প্রাণী এবং উদ্ভিদ একে অপরের পরিপূরক এক কথায় মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। কেননা উদ্ভিদ যা ত্যাগ করে প্রাণী তা গ্রহণ করে আবার প্রাণী যা ত্যাগ করে উদ্ভিদ তা গ্রহণ করে। প্রাণীর মধ্যে উদ্ভিদ থেকে সবচেয়ে বেশি যে উপকৃত হয় সে হলো মানব প্রাণী। মানুষকে উদ্ভিদের যতটা না প্রয়োজন তার থেকে শতগুণ বেশি প্রয়োজন হলো উদ্ভিদকে মানুষের। উদ্ভিদ মানুষের কাছ থেকে শুধু কার্বন ডাই অক্সাইডই গ্রহণ করে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মানুষকে প্রদান করে অক্সিজেন, দেয় খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের উপকরণ, জ্বালানি, আসবাবপত্র এবং
ঔষধ ও ঔষধের কাঁচামাল। আরো দেয় মাতৃস্নেহের মতো ছায়া আর শোষণ করে নেয় তাপমাত্রা। উদ্ভিদ বেঁচে থাকার প্রয়োজনে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে প্রাণীর বায়ুমণ্ডলকেই দূষণমুক্ত করে। মানব প্রাণীর বেঁচে থাকা সকল উপকরণই উদ্ভিদ দিয়ে থাকে। শুধু মানব প্রাণীই নয় সমগ্র প্রাণীজগতের অস্তিত্বই উদ্ভিদজগতের উপর নির্ভরশীল।
ঔষধ ও ঔষধের কাঁচামাল। আরো দেয় মাতৃস্নেহের মতো ছায়া আর শোষণ করে নেয় তাপমাত্রা। উদ্ভিদ বেঁচে থাকার প্রয়োজনে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে প্রাণীর বায়ুমণ্ডলকেই দূষণমুক্ত করে। মানব প্রাণীর বেঁচে থাকা সকল উপকরণই উদ্ভিদ দিয়ে থাকে। শুধু মানব প্রাণীই নয় সমগ্র প্রাণীজগতের অস্তিত্বই উদ্ভিদজগতের উপর নির্ভরশীল।
উদ্ভিদ থেকে যে খাদ্য আমরা পাই সেই খাদ্যের মধ্যেই থাকে বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক ঔষধ যা খেয়ে মানব প্রাণী বেঁচেও থাকে, থাকে সুস্থ। উদাহরণস্বরূপ ব্যাখ্যা করছি বিভিন্ন রকম ফল, শাক-সব্জির, রবি শস্য ইত্যাদির মধ্যে বিদ্যমান আছে একেকটা রোগের ঔষধ ও মানব প্রাণী প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। ফল, শক-সবজি, বীজ, তরু-লতা ইত্যাদির মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক ঔষধ খেয়ে আমরা মানুষেরা সুস্থ থাকি অন্যদিকে মানুষের ত্যাগকৃত বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড উদ্ভিদই গ্রহণ করে বাতাস দূষণমুক্ত করে বায়ুমণ্ডলকে প্রাণীজগতের বসবাসের জন্য উপযোগী করে রাখে। ফলশ্রুতিতে এই ধরায় আমরা মানুষেরা বেঁচে থাকে দীর্ঘ সময় কেবলমাত্র উদ্ভিদের দয়ায়। তবুও মানব প্রাণীরা উদ্ভিদের প্রতি কত অকৃতজ্ঞ। আজকে উদ্ভিদের অসীম দানের বিপরীতে মানুষের সামান্য কৃতজ্ঞতাবোধ বা সহানুভূতির যে বিশাল ঘাটতি দেখা যায় বা প্রকাশ পায় এর প্রমাণস্বরূপ আমার বাস্তব জীবনের ঘটনাই এই এ-লেখায় তুলে ধরছি।
গল্পের ছলে গল্প করা আমাদের একটা নৈতিক স্বভাব, আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আমার এক পুরনো সহকর্মী গল্পের ছলে একদিন বললেন ওনার এক বর্তমান সহকর্মী ভাড়া বাসা ছেড়ে নতুন ভাড়া বাসায় ওঠেন। বাড়িতে নতুন ভাড়াটিয়া উঠলে বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়াকে দেখতে আসেন, ভাড়াটিয়ার আসবাবপত্র থেকে সবকিছু বাড়ির মালিক পরখ করে থাকেন। আমার সহকর্মীর বর্তমান সহকর্মীর নতুন ভাড়া বাসার মালিকও একই কাজ করতে গিয়ে দেখেন বারান্দায় গাছ, বাড়িওয়ালা রেগে আগুন হয়ে গেলেন এবং সাথে সাথে গাছগুলো বারান্দায়ই ছুড়ো ফেলে দিলেন। ছোট্ট গাছ হলেও আসবাবপত্রের মতো মূল্যবান জিনিস বা সম্পদ হলো গাছ বিশেষ করে শহুরে ভাড়াটিয়াদের কাছে। তাই নতুন আসা ভাড়াটিয়ার কোন জিনিস বা সম্পদ ছুড়ো ফেলা আগে বাড়িওয়ালার আইনগত কতটা অধিকার আছে ভেবে দেখার প্রয়োজন বোধ করলেন না ঐ বাড়িওয়ালা। ভাড়াটিয়াদের সাথে এরকম অমানবিক কাজ অনেক বাড়িওয়ালারা অহরহই করে থাকেন।
এখন আসছি আমি যে বাড়িতে ভাড়া থাকি সেই বাড়ির মালিকের কথায়। বাড়িটা ৬তলা কিন্তু ৬তলা বাড়ির মধ্যে দু’একজন ভাড়াটিয়াদের দু'চারটা গাছ ছাড়া বাড়ির মালিকের একটি ছোট্ট গাছও নেই। আমিও যখন ভাড়া বাসা পরিবর্তন করে আমার বর্তমান ভাড়া বাসায় ওঠি, তখন এই বাসাটা আগের বাসার তুলনায় কিছুটা ছোট হয়ে যায়; বাসা খালি অবস্থায় বোঝা যায়নি। আমার বাসা ভর্তি ছিল গাছ তাই সব গাছ বাসার ভিতরে রাখার জায়গা না হওয়ার কারণে বাসার মূল দরজা সামনে অর্থাৎ বাসায় ঢোকার করিডোরে এবং একেবারে নিচে অর্থাৎ নিচতলায় গেটের সামনে একটা লম্বা করিডোর আছে ঐ করিডোরেও কিছু গাছ রেখেছিলাম; অবশ্য আমি বাসায় ঢোকার মূল দরজার সামনে একটা বা দুইটা গাছ সবসময়ই রাখতাম। এই বাসায় ওঠার কিছুদিন পর একদিন দেখি আমার দরজার সামনের করিডোরে গাছগুলো নাই, খুঁজে দেখি বাড়িওয়ালা নিচে ফেলে রেখেছেন। কষ্ট পাওয়া ছাড়া কিছুই বলতে পারলাম না। তখন আমি পাঁচতলায় থাকতাম, বাসা থেকে পানি নিয়ে নিচের গাছগুলোতে দিতাম এবং যতটা সম্ভব হতো যত্ন করতাম। আরো বেশ কিছুদিন পর একদিন বাইরে থেকে এসে বাসায় ঢোকার সময় দেখি নিচের করিডোর ফাঁকা, একেবারে ফকফকা পরিষ্কার। তখন আমার ভেতরের কষ্টের ভূমিকম্পটা কেবলমাত্র গাছ প্রেমিকরাই বুঝতে পারবেন। প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিলাম সেই দিন আমার ভালোলাগা ভালোবাসা এবং বেঁচে থাকার জন্য কাজের প্রেরণা সব ফেলে দিয়েছিলেন বাড়িওয়ালা আমাদের না বলে। তখন আমি বাড়িওয়ালীকে বলেছিলাম এভাবে গাছগুলো ফেলে না দিয়ে আপনাদের সমস্যাটা আমাকে বলতে পারতেন, আমাকে বললে আমি বাসার ভিতরে নিয়ে যেতাম বা কোন একটা ব্যবস্থা তো করতাম। এই গাছগুলো সংগ্রহ করতে গিয়ে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে, এগুলোর পিছনে শ্রম দিতে হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারিনি, কেননা বাসা ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন নতুন ভাড়া বাসা নেওয়ার অবস্থা আমার ছিলনা আর অন্য বাসায় গেলে গাছ প্রেমিক বাড়িওয়ালা পাবো তার গ্যারান্টিও তো নেই।
আমার বাসায় গাছ থাকার কারণে প্রতিনিয়ত কোন না কোন অজুহাতে বাড়ির মালিক (বাড়িওয়ালী) আমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন গাছের জন্য যেন তাদের বিল্ডিংয়ের কোনরকম ক্ষতি না হয়। গাছের ঝরে যাওয়া দু’একটা পাতা নিচে পড়ে গেলে এর জন্য অসংখ্য গালিগালাজ শুনতে হয় বুয়ার মাধ্যমে। বৃষ্টি হলে বারান্দায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে। বারান্দার পানি নিষ্কাশনের জন্য যেখানে পাইপ দেওয়া হয়েছে সেখানে হালকা ঢালু না করে কিছুটা উঁচু করে ফেলেছে (হয়তো ভুলবশত) তাই পানি বারান্দায় জমে থাকে আর চুয়াইয়া পরতে থাকে যতক্ষণ না পানি শুকায় ততক্ষণ। কারণ ঝাড়ু দিয়ে একবারে পরিষ্কার করতে গেলে করতে পারি না, নিচে সমস্যা হয়। এখন পানি চুয়াইয়া পরে এতেও দোষ আমার গাছের, আমরা গাছে পানি দেই সেই পানি নাকি চুয়াইয়া পরে তাদের বিল্ডিং নষ্ট হচ্ছে, অথচ বারান্দার পানি বাইরে পরার জন্যই পাইপ লাগনো হয়েছে।
কয়েকদিন আগের ঘটনা, রাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় যথারীতি আমার বারান্দায় পানি জমে যায়। কাজের বুয়ার কথায় বাড়িওয়ালী নালিশ নিয়ে আসে বৃষ্টি হওয়ার একদিন পরে। এবার আর আমি উনাকে ছেড়ে কথা বলিনি, আমি ওনাকে বলি বৃষ্টির পানি জমে থাকলে আমার কি করার আছে, ঝাড়ু দিয়ে কাঁচা দিলে পানি পরিষ্কার হয়ে যেত আপনি বলেছেন বৃষ্টি হলে পানি নিচে পড়ে, এখন ঝাড়ু দেই না পানি জমে থাকে আর চুয়াইয়া পরে। আমি কি করব, আমি যেভাবে যাই আপনাদের ঐ ভাবেই সমস্যা। বাড়িওয়ালী আমাকে বলে কেন এই পানি আপনাদের গাছের পানি না? তখন আমি উনাকে বলি আপনি দেখে যান কিসের পানি, আমার গাছের একফোঁটা পানিও ফ্লোরে পরে না টবের নিচে প্লেট দেয়া আছে। আমি গাছে পানি দেই অল্প অল্প করে যাতে টবের নিচের প্লেটে পানি জমে না থাকে। উনি বলেন আমরা মনে করেছি গাছের পানি, আমি আবারও উনাকে বলি আপনি দেখে যান না কেন, বারবার একই কথা বলছিলেন যে তারা মনে করেছেন গাছের পানি চুয়াইয়া পরে তাদের বিল্ডিং বাইরে লাল হয়ে গেছে। তখন উনার কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি উনাকে বলি আপনাদের তো একটা গাছও নেই এই ৬তলা বাড়ির মধ্যে। কোথা থেকে নেন আর কার কাছে দেন, উনি আমাকে বলেন আপনি যেখান থেকে দেন আর যার কাছে দেন। আমি বলি আমার তো আছে বরং আমার প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশি আছে, কারণ আমার বাসা ভর্তি গাছ (বাসায় প্রথম কেউ আসলে জঙ্গলও বলে)। আমি ওনাকে আরও বলি আপনি বাঁচলে তো আপনার বিল্ডিংয়ের প্রয়োজন আপনিই যদি না বাঁচেন তো বিল্ডিং দিয়ে কি হবে? সারা বাড়িতে আপনাদের একটা ছোট্ট গাছও নেই, বেঁচে যে আছেন অক্সিজেন নিয়ে সেই অক্সিজেন কোথা থেকে নেন, বিষ কার কাছে দেন। উনি বলেন “এত তো আর হিসেব করি না”। তখন আমি উনাকে বলি, ছাদে দুই’চারটা গাছ লাগালে কি হয়; বাড়িওয়ালী বলেন ওর আব্বু (বাড়িওয়ালা) কিছুতেই লাগাতে দিবে না। তিনি আরো বলেন দুলাভাই (ওনার বড় বোনের স্বামী)গাছ লাগিয়ে বিল্ডিংয়ের ছাদ ড্যামেজ করে ফেলেছেন। তখন আমি ওনাকে বলি ছাদে পানি জমে ছিল ছাদ ড্যামেজ হয়ে গেছে এতে গাছের কি দোষ? যারা গাছের পরিচর্চা করেছে দোষ তাদের, তারা গাছে পানি দিয়ে ছাদে পানি জমিয়ে রেখেছে, পরিষ্কার করে নাই ছাদ ড্যামেজ হয়ে গেছে। আমি উনাকে আরো বলি গাছ কখনো ক্ষতি করে না, গাছ যদি ক্ষতি করত পরিবেশবিদগণ গাছ লাগানো নিয়ে এত মাতামাতি করে উদ্বেগ প্রকাশ করত না; আর সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯-জাতিসঙ্ঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে ইমরান খান ১০ বিলিয়ন গাছ লাগানোর পরিকল্পনার করার কথা জানানোর পরও পরিবেশ নিয়ে এত উদ্বেগ প্রকাশ করতো না বরং সবাই গাছ কেটে মরুভূমি বানিয়ে ফেলত। তখন উনি আস্তে আস্তে পাশ কেটে চলে যেতে যেতে বলেন এত কিছু তো আর ভাবি না। এই হলো শহরের অধিকাংশ বাড়ির মালিকদের গাছের প্রতি মানসিকতা। এই বাসায় ভাড়া আছি ৮ বছর। প্রতিনিয়ত শুনতে হচ্ছে আমার গাছ যেন তাদের বিল্ডিংয়ের কোন ক্ষতি না করে, একই কথা শুনতে শুনতে আমি ঐদিন প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয়েছি কিছুটা কঠোর ভাষায়।
একজন ভাড়াটিয়া হিসেবে আমার এই লেখার মাধ্যমে আজ আমি গাছ অপছন্দকারী শহরের ভাড়া দেওয়া বাড়ির মালিকদের দুইটি কাজ করার জন্য করজোড়ে অনুরোধ করছি। প্রথমটি খুবই সহজ, ভাড়া দেওয়ার সময়ই পরিবারের সদস্য সংখ্যার সাথে আসবাবপত্র বা জিনিসপত্রের সংখ্যা ও নাম জেনে নিবেন; এতে করে ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালা উভয়ের জন্যই স্বস্তিকর হবে। দ্বিতীয়টা একটু ব্যয়বহুল তবু আপনারা করবেন আপনাদেরই বাড়ী বা বিল্ডিং রক্ষার স্বার্থে। আপনারা আপনাদের বাড়ী কাঁচ দিয়ে ঢেকে ফেলুন, এমন কোনো ফাঁকা রাখবেন না যাতে কোনো অবস্থায়ই বাইরের বাতাস ঢুকতে পারে এবং আপনাদের বাড়ির বাতাস টুকুও যেন কোনো অবস্থাতেই বাইরে বের হতে না পারে। তাহলেই বুঝতে পারবেন আপনাদের বাড়ি বা বিল্ডিং নিয়ে আপনাদের দম্ভ কতটা সুস্থ, এও বুঝতে পারবেন আপনাদের গাছহীন বাড়ি বা বিল্ডিং কতটাই নড়বরে! হয়তো বুঝতে পারবেন আপনারা পরের দয়ায় কিভাবে দিনযাপন পার করে বেঁচে আছেন! তখনই হিসেব করবেন কোথা থেকে নিচ্ছেন আর কার কাছে দিচ্ছেন। যদি এইটুকু বোধোদয় হয় তাহলেই বুঝতে পারবেন গাছওয়ালা ভাড়াটিয়ারা আপনাদের বিল্ডিংয়ের ক্ষতি না বরং বেঁচে থাকার একমাত্র উপকরণ আপনাদেরকে ভাগ দিয়ে কতটা উপকার করছে। আপনাদের কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত গাছওয়ালা ভাড়াটিয়াদের প্রতি।
দমে দমে বায়ুমণ্ডল থেকে আপনারা যে অক্সিজেন গ্রহণ করছেন আর খাদ্য খেয়ে বেঁচে আছেন তা কিন্তু উদ্ভিদ থেকেই পাচ্ছেন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রাণীজগতকে বেঁচে থাকার সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকরণের জন্য উদ্ভিদের উপরই নির্ভরশীল হতে হয়। উদ্ভিদই আমাদের আপনাদের অক্সিজেন ও খাদ্যের মতো বস্ত্র এবং আসবাবপত্রের যোগানদার। জন্ম থেকে মৃত্যুর পর পর্যন্ত গাছ মানব-প্রাণীর চিরসাথী হয়ে থাকে। মৃত্যুর পরেও আমাদেরকে (বিশেষ করে মুসলমানদের)কবরে গাছের ওপরই রাখা হয়। আপনারা যে খাটে তুলতুলে বিছানায় নিশ্চিন্তে আরাম করে ঘুমাচ্ছেন ঐ আরামটুকুও উদ্ভিদেরই (কাঠ ও তুলা) দান।
গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়া, হাঁস-মুরগী, মাছ ইত্যাদি সকল জলজ ও স্থলজ প্রাণীর অস্তিত্বই উদ্ভিদের অনুপস্থিতিতে বিলীন হয়ে যেত। ছোট বড় নানা ধরণের উদ্ভিদের লতা-পাতা ও ফুল-ফল খেয়েই এসব প্রাণীরা বেঁচে থাকে আর এসব প্রাণী মানব-প্রাণীর পুষ্টিকর খাদ্য। কিন্তু উদ্ভিদ ‘ফটোসিনথেসিস’ এর মাধ্যমে নিজেদের খাবার নিজেরাই তৈরি করতে পারে খাবারের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল হতে হয় না। প্রাণীর বেঁচে থাকার সমস্ত উপকরণই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উদ্ভিদ থেকেই পেয়ে থাকি।
যেখানে সারা দুনিয়ার আবহাওয়া নিয়ন্ত্রিত হয় গাছ দ্বারা। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে, বৃষ্টিপাতের সহায়তা করতে গাছ অপরিহার্য। একটি গাছ বছরে সোয়া ৬ কেজি বিশুদ্ধ অক্সিজেন বাতাসে ছাড়ে আর ১৩ কেজি কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে পরিবেশকে নির্মল করে। যা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি। এক কথায় মানব কল্যাণে গাছের অবদানের শেষ নেই। দুঃখের বিষয় সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে বৃক্ষের প্রতি আমাদের উদাসীনের কারণে মানুষকে নানাভাবে বিপদগ্রস্ত হতে হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment