“বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম” বাস্তবতা বলে কর্মকর্তা-কর্মচারী শিক্ষা কার্যক্রম
গত ২৮/০৩/২০১৯ তারিখে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের উদ্বেগ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় দেশব্যাপী “বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম”-“বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা কনফারেন্স”, ঢাকা-২০১৯। কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ হ ম মুস্তফা কামাল।না হল শিক্ষা না হল দীক্ষা
“বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম”- “বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা কনফারেন্স” ঢাকা-২০১৯। সৌভাগ্যক্রমে আমি উক্ত অনুষ্ঠানের কার্ড পাই এবং অংশগ্রহণ করি। জাঁকজমক অনুষ্ঠানের আয়োজন দেখে ভাল লাগল। যথাসময়ে যথারীতিতে অনুষ্ঠান শুরু হয়; প্রধান অতিথির বক্তব্য হল, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন হল, প্রশ্নোত্তর পর্ব হল, হল ভুরিভোজ।কিন্তু! কিন্তু হল না শুধু বিনিয়োগকারীদের জন্য কিছু; না হল শিক্ষা না হল দীক্ষা। “বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম” প্রতি বছরই উৎযাপন করা হয়ে থাকে জাঁকজমক ভাবেই। যত শিক্ষাই বিনিয়োগকারীদের দেয়া হয়ে থাকুকনা কেন, যত রকম পদ্ধতিতেই এই শিক্ষা দেয়া হোক না কেন, কেন জানি বিনিয়োগকারীরা কোনভাবেই শিক্ষিত হচ্ছে না। এখনে কি শিক্ষকরা দুর্বল, আনাড়ি, অনভিজ্ঞ, অযোগ্য নাকি শিক্ষার্থীরা মেধাহীন গোবর মাথা, অমনোযোগী, শিক্ষায় অনীহা না বিরক্তিকর বা অস্বস্তিকর মনোভাব। এত চেষ্টার ফলেও শিক্ষার্থী শিক্ষিত হচ্ছে না; স্কুলের (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) ফালাফল ভাল হচ্ছে না। শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রম এবং প্রাণপণ চেষ্টার পরও বছরের পর বছর একই অবস্থায় বহাল আছে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল। এই ফলাফল নিয়ে শিক্ষদের মধ্যে কোন রকম গবেষনা নেই এবং গবেষনার প্রয়োজনো তারা বোধ করে না। সহকারী শিক্ষদের মাথা ব্যথা নাই, থাকতেও পারে না কেননা তারা তো মাস গেলে বেতন পায়, শিক্ষার্থীর ফলাফল নিয়ে তাদের চিন্তা না করলেও চলে। কিন্তু হেডমাস্টার মশাই তো এ দায় এড়াতে পারেন না। স্কুলের ভাল-মন্দ হেডমাস্টারের ঘাড়ে বর্তায়। দুর্নাম হেডমাস্টারের হয় আর হয় স্কুলের, নাকি স্কুল হেডমাস্টার বিহীন। যদি হেডমাস্টার না থাকে নিয়োগ দেয়া খুবই দরকার, তা নাহলে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে মারামারি লেগে যাবে। স্কুলের হেডমাস্টারের খালি পদে বসা নিয়ে না হয় স্কুলে উপস্থিত হওয়া নিয়ে কিংবা ক্লাস নেয়া নিয়ে। হেডমাস্টারের পদ খালি থাকলে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে ইচ্ছে জাগতেই পারে শূন্য পদ পূরণ করার যোগ্যতা থাক বা না থাক। জবাবদিহিতা কিংবা দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ না থাকার দরুন স্কুলে উপস্থিত হওয়া কিংবা ক্লাস নেয়া নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মারামারি একটু আকটু হতেই পারে; এ তো দোষের কিছুনা। এমনিতেই, স্কুলের নাজুক অবস্থা দেখে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে তাই বর্তমানে স্কুলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি সংখ্যা খুবই নগন্য। তার উপর যদি শিক্ষকদের মধ্যে মারামারি হয় তাহলে স্কুলের কি হবে, কি হবে শিক্ষার্থীদের। সময় এখনই হেডমাস্টারের সক্রিয় হওয়া আর হেডমাস্টারের না থাকলে নিয়োগ দেয়া অবশ্যই যোগ্যতা অনুসারে।
শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের প্রশ্নে উত্তর দিতে কারচুপি করে আর এই
কারচুপির জন্য পদ্ধতি অবলম্বন করে নিয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন লিখে প্রশ্ন করতে হবে, যাতে শিক্ষকরা সুক্ষকারচুপি করতে পারে, ধরা পরার ভয় যাতে না থাকবে। হয়েছেও তাই, শিক্ষকরা তাদের ইচ্ছেমত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে বাকি প্রশ্নগুলো প্রশ্ন বাক্স থেকে অউট হয়ে গেছে। লোক দেখানো এই প্রশ্নোত্তর পর্ব শিক্ষার্থীদের জানার অগ্রহ মলিন করে নিরুৎসাহিত করেছে। শিক্ষকরা দুর্বল তাই শিক্ষার্থীদের দুর্বল বানিয়ে রাখাই ছিল এই পর্বের মূল লক্ষ্য। যেখানে প্রশ্ন মুখে না বলে লিখে দিতে হয় সেখানে প্রশ্নের উত্তরও লিখে দেয়া উচিত ছিল, তাতে করে যারা প্রশ্ন লিখে শিক্ষকদের কাছে পাঠিইয়েছে প্রত্যেক প্রশ্নকারি তার প্রশ্নের উত্তর হাতে পেত; তাই নয় কি? সব কিছুরই একটা সীমা পরিসিমা থাকে, গোজামিলেরও লিমিট থাকা দরকার ছিল; আর কত দিন গোজামিল দিয়ে চলবে এই বিদ্যালয়?
কারচুপির জন্য পদ্ধতি অবলম্বন করে নিয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন লিখে প্রশ্ন করতে হবে, যাতে শিক্ষকরা সুক্ষকারচুপি করতে পারে, ধরা পরার ভয় যাতে না থাকবে। হয়েছেও তাই, শিক্ষকরা তাদের ইচ্ছেমত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে বাকি প্রশ্নগুলো প্রশ্ন বাক্স থেকে অউট হয়ে গেছে। লোক দেখানো এই প্রশ্নোত্তর পর্ব শিক্ষার্থীদের জানার অগ্রহ মলিন করে নিরুৎসাহিত করেছে। শিক্ষকরা দুর্বল তাই শিক্ষার্থীদের দুর্বল বানিয়ে রাখাই ছিল এই পর্বের মূল লক্ষ্য। যেখানে প্রশ্ন মুখে না বলে লিখে দিতে হয় সেখানে প্রশ্নের উত্তরও লিখে দেয়া উচিত ছিল, তাতে করে যারা প্রশ্ন লিখে শিক্ষকদের কাছে পাঠিইয়েছে প্রত্যেক প্রশ্নকারি তার প্রশ্নের উত্তর হাতে পেত; তাই নয় কি? সব কিছুরই একটা সীমা পরিসিমা থাকে, গোজামিলেরও লিমিট থাকা দরকার ছিল; আর কত দিন গোজামিল দিয়ে চলবে এই বিদ্যালয়?
শিক্ষা দিতে দিতে মাথাটাই শেষ করে ফেলেছেন, এখন একটু স্বস্তি দেন
বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম, আদৌ কি বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম না কি অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী শিক্ষা কার্যক্রম, বাস্তবতা কোনটা? যেখানে শতকরা ৯৫ জন অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী সেখানে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম কি করে বলা হয়? এও হতে পরে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি সংখ্যার হার শূন্যতে এসে দাঁড়িয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিনিয়োগকারী সাজতে হয়েছে অনেকটা বাধ্য হয়ে। আবার এমনও হতে পারে বিদ্যালয়ের অর্থ খরচ করার কোন পথ না থাকায় যেনতেন একটা নাম দিয়ে নিজেরা নিজেরা একটু আনন্দ উৎসব করে নিল। শুধু নামটা ব্যবহার করলো বিনিয়োগকারীদের। এই নামকরণে বিনিয়োগকারীরাও কোন রকম আপত্তি করতে পারে না কেননা তারা খুবই দুর্বল। আজ শিক্ষার্থীরা এতই দুর্বল যে তাদের মনের জোর অনেক আগেই গুণে খেয়ে শেষ করে ফেলেছে সেই সাথে গায়ের জোড়ও শেষ হয়ে গেছে, কারণ আর কতদিনইবা থাকবে, তাও ফুরিয়ে যাওয়া একেবারে শেষ পথের শেষ প্রান্তে পৌছে গেছে। দিনের পর দিন বছরের পর বছর নাখেয়ে নাখেয়ে গায়ের জোর আর কত দিন ধরে রাখা যায়। একদিন তো প্রকাশ পাবেই অনাহারীর কংকাল দেহ।বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আপনারা যা খুশি করেন শিক্ষার্থীদের নিয়ে কেন এত টানাহেছড়া করেন, তাদের আর কি শিক্ষা দিবেন, শিক্ষা দিতে দিতে মাথাটাই শেষ করে ফেলেছেন, এখন একটু স্বস্তি দেন। রোগে আক্রন্ত হয়ে মানুষ যখন মৃত্যুর দুয়ারে এসে দাঁড়ায় তখন ডাক্তারও রোগির পরিবারের লোকদের বলে যে কয়দিন আছে যা খেতে চায় খাওয়ান। পৃথিবীর সব দেশেই সাধারণতঃ ফাঁসির আসামীর অন্ততঃ একটি ইচ্ছে হলেও পূরণ করা হয়ে থকে। তাই বলছি বিনিয়োগ শিক্ষার্থীদের রেহাই দেন এক কালে ভুল করে এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল। বিনিয়োগ শিক্ষার্থীরা এখন আর স্কুলে হাজিরা দিতে যেতে চায় না, যারা নিস্তেজ দেহটাকে কষ্ট দিয়ে এখনও হাজিরা দিয়ে যাচ্ছে তাদের কথা একটু হলেও ভাবুন। শিক্ষার্থীদের কষ্ট দেয়া থেকে রেহাই দিতে এখন বিদ্যালয় বন্ধ করে দিন। যদি কখনও টুল চেয়ার টেবিল মেরামত করতে সামর্থ্য হয় স্কুল কমিটির আর যোগ্য হেডমাস্টার, সহকারী মাস্টার খুঁজে পান তখন নাহয় বিদ্যালয় খুলে দিবেন। এরই মধ্যে যদি বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ সুস্থ্ হয় কিংবা বেঁচে থাকে তাদের আবার নতুন করে ফ্রি ভর্তি করে নিবেন আর নাহলে নতুন শিক্ষার্থী খুঁজে নিবেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের যে নমুনা কনফারেন্সে দেখা গেল তাতে মনে হলো সারা বছর অফিস কর্মকর্তার বইয়ের সাথে কোন যোগসূত্র ছিল না। তাই পরীক্ষার আগের রাতে পড়া মুখস্থ করতে না পেরে কনফারেন্সে এসে ধুমছে পড়া মুখস্থ করছেন কিংবা কিভাবে পড়া মুখস্থ করতে হয় বিনিয়োগ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন। যাই হোক পড়া মুখস্থ করার কৌশল দেখানোর জন্য এত বড় আয়োজন করে শুধু শুধু দু’একজন বিনিয়োগ শিক্ষার্থীদের বিরক্ত করার কোন দরকার ছিল কি? বিদ্যালয় কর্তপক্ষ ভেবে দেখবেন। ভবিষ্যতে কিছু শিখে শিক্ষার্থীদের শিখাতে আসবেন। প্রবন্ধ উপস্থাপনার নামে যেভাবে ছোট বাচ্চা ছেলের মত গা জাকাইয়া পড়া পড়ছিলেন এটা কি ধরনের উপস্থাপনা আপনারা নিজেরাই বিশ্লেষণ করবেন।
মধ্যাহ্ন ভোজেও বিনিয়োগ শিক্ষার্থীদের ভাগ্য বিমাতাসুল্ভ আচরণ করল। শিক্ষার্থীরা ক্লাশের শেষ হওয়া পর্যন্ত ক্লাশ করছিল অন্যদিকে অতিথি শিক্ষার্থীরা ভোজনে ব্যস্ত হয়ে গেল। অবশ্য এখানে অতিথি শিক্ষার্থীদের কোন দোষ নাই তারা তো আর নিজে থেকে ব্যস্ত হয় নাই তাদেরকে ব্যস্ত হওয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। এখানেও হয়েছে কারচুপি। ক্লাশ শেষ করে বিনিয়োগ শিক্ষার্থীরা দেখে ভোজের ভোজ প্যাকেট শেষ হয়ে গেছে। একেই বলে বিনিয়োগকারীগের নিয়তি। বিনিয়োগকারীদের নিয়তি যাই হোক কর্তৃপক্ষের আরো সুশৃংখলভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা বা তদারকি করা দরকার ছিল। বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুষ্ঠান কিন্তু বিনিয়োগকারীদেরই কার্ড দেয়া হয়না, অফিস স্টাফরা অংশগ্রহণ করে বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করছে, শুধু এ বছরই না বরাবর তাই হয়ে আসছে। পরিশেষে একজন বিনিয়োগকারী হিসেবে কনফারেন্সে নাম এবং উদ্দেশ্য পরিবর্তন করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
No comments:
Post a Comment