google-site-verification: google3e58058dabcd012d.html পয়ন্তপ : এক প্রদীপ থেকে অগণিত প্রদীপ জ্বালানো যায়

এক প্রদীপ থেকে অগণিত প্রদীপ জ্বালানো যায়



এক প্রদীপ থেকে অগণিত প্রদীপ জ্বালানো যায় 
এক প্রদীপ থেকে অগণিত প্রদীপ জ্বালানো যায়

এক স্রষ্টার সৃষ্টি মানুষ নিজেদের স্বার্থে ভেধবুদ্ধির সৃষ্টি করেছে। সবাই একই স্রষ্টার সৃষ্টি বলে মানুষের মধ্যে কোন পার্থক্য বিবেচনা করা যথার্থ নয়। পৃথিবীর সমাজ ব্যবস্থায় মানুষের মধ্যে যে পার্থক্য দেখা যায় তা মানুষের সৃষ্টি। এর ফলে মানব জাতির জীবনে অসাম্য ও বিরোধ প্রবল হয়ে উঠেছে। ফলে অশান্তি ভোগান্তি ভোগ করছে মানুষ। মানুষের মধ্যে ভেদাভেদের শেষ নেই। ধর্মে বর্ণে যে পার্থক্য চিহ্নিত হয় তা মানুষের যথার্থ পরিচয় নয়। সমাজে আছে উঁচু-নিচুর পার্থক্য, আছে ধনী গরীবের ব্যবধান।
সবকিছু ব্যবধানে মানুষের যে পরিচয় তা মানুষ হিসাবে। ধর্মে বর্ণে ধনে মানুষকে পৃথক না করে মানুষের মর্যাদাকে সবার উপরে স্থান দিতে হবে। মানব শিশুর জন্ম গ্রহণ করেই মানুষ হয় না। তাকে মনুষ্যত্ব অর্জন করে মানুষ হয়ে উঠতে হয়। নিরলস সাধনায় অপরিসীম ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে। শিক্ষা আর অভিজ্ঞতায় জীবনকে যোগ্য করে তুলতে হয়। জীবন গঠনের সাধনার পথে সামনে আদর্শের আলোকবর্তিকা লক্ষ্য করে এগিয়ে যেতে হয় মানুষকে। সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য না থাকলে জীবন গঠনে আসে বিভ্রান্তি। জীবনের স্বপ্ন তখন বাস্তবায়নে বাধার সম্মুখীন হয়। কোথায় যেতে হবে সে চেতনা যদি না থাকে, কেমন হতে হবে সে আদর্শ যদি লক্ষ্যযোগ্য না থাকে, তাহলে জীবনে সাফল্য অনিবার্য হয়ে উঠে না। এ উদ্দেশ্য সফল করে তোলার জন্য কার্যকর সহায়ক ভূমিকা পালন করে, লাভ করা যায় সফল জীবন গঠনের অনুপম উপাদান।



জীবন গঠনে জীবনচরিত বিশেষ সহায়তা করতে
মানুষের জীবনকে সুন্দর ও সফল করে গঠন করতে পারলে সে জীবন সার্থক হয়ে ওঠে। জীবন হাজার সমস্যায় জর্জরিত। জীবনের এগিয়ে চলার পথে লক্ষ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেসব অতিক্রম করে জীবনকে সফল করে তুলতে হয়। এখানে জীবনচরিত পথ দেখায়। সফল মানুষের জীবনচরিতে আছে সংগ্রামে সাফল্য লাভের ইতিহাস। সে ইতিহাস থেকে মানুষ প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণ করে জীবনচরিতে আলোকবর্তিকার আলোতেই মানুষ পথ চলে। মানুষ পৌঁছে তার গন্তব্যে। মহামানবের জীবন কিভাবে সফল হয়েছে। কিভাবে তাঁরা পরম গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। সেসব বিবরণ স্থান পায় জীবনচরিতে। জীবন গঠনে জীবনের আদর্শ নির্ধারণে জীবনচরিত বিশেষ সহায়তা করতে পারে। এসব আদর্শ্য থেকে দিক নির্দেশনা নিয়ে এবং তা কাজে লাগিয়ে জীবন গঠন করে নিজেকে সফল করে তোলে যায়। সংসার জীবনে মানুষ নানাভাবে বিপর্যস্ত হয়। আত্মীয়-পরিজন পরিবেষ্টিত হয়ে জীবন যাপন করলে মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই নিঃসঙ্গ হয়ে থাকে। প্রতিপক্ষের হিংস্রতা, বন্ধুর ঈর্ষায় পরিবারের চাপে, বাস্তবতার প্রতিক্রিয়ায় কখনো সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে বিপর্যস্ত মানুষ নিজে নিজে কর্তব্য নির্ধারণ করতে হয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। অসহায় সেই মানুষটি প্রতিরোধের দুর্জয় সাহস সঞ্চয়ের জন্য নৈরাজ্য থেকে অব্যাহতি পেয়ে অকুতোভয় হয়ে দাঁড়ানোর জন্য প্রেরণার উৎস হয় জীবনচরিতে। তখন মানুষ লাভ করে তার কর্তব্যের পথ নির্দেশনা আর অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠে জীবনচরিত। জীবনচরিতের আছে মহান মানুষের সাফল্যের কৌশল। তাই বলা হয় জীবনচরিত হল প্রদীপের মত, একটি প্রদীপ থেকে যেমন অগণিত প্রদীপ জ্বালানো যায়। তেমনি এক মানুষের জীবনে থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে অসংখ্য মানুষের ব্যর্থতা এবং ভগ্ন স্বপ্ন, নৈরাশ্য ও হতাশাগ্রস্ত জীবনের তিমিরারণ্যে জীবনচরিত সূর্যের মতো সুদৃঢ়। কিন্তু সেই সঙ্গে শক্তির উৎস ও সম্ভাবনা।
জীবনচরিত মানুষের কাছে দিকদর্শন যন্ত্রের মত
জীবনের পথ চলা তখনই সহজ হয়, যখন জীবনচরিত পরশ পাথরের মত কাজ করে। বিগত দিনের স্মৃতি মানুষকে সশরীরে দেখা যায় না। কিন্তু তার পরিচয় মেলে জীবনচরিতে। সেখানকার পরশ পেয়ে মানুষ হয় উদ্দীপিত, জীবনের পথ চলার পাথেয় জোগাড় করে। জীবনচরিত মানুষ জীবনে দিগদর্শনের মত কাজ করে। মানুষের জীবনে আছে অনেক দুঃখ-বেদনা, অনেক উত্থান-পতন। হাজার সমস্যায় জর্জরিত মানুষ তার যথার্থ গন্তব্যের ঠিকানা খুঁজে পায় না। জীবনচরিতে বর্ণিত মহাপুরুষগণের জীবনের কাহিনী আর তাদের অমূল্য বাণী বিভ্রান্ত মানুষকে দেয় সঠিক পথ নির্দেশনা। উত্তাল তরঙ্গ- সঙ্কুল জীবন সমুদ্রে মানুষ দিশেহারা যাত্রী। ক্ষণজন্মা মহাপুরুষগণের জীবনচরিত মানুষের কাছে দিকদর্শন যন্ত্রের মত পার্থিব জীবনের চির উজ্জ্বল আলোকস্তম্ভ। তাদের প্রদর্শিত পথ ধরে জীবনকে সঠিক লক্ষ্যে পরিচালিত করে মানুষ কৃতার্থ হয়।
সাধারণ মানুষ নব জন্ম লাভ করে
এই পৃথিবীতে মানুষ একবারই আসে। মানুষের জীবন একটাই। এ জীবনকে অবশ্যই সফল করে তুলতে হবে। নিরন্তর সাধনা, নিরলস প্রচেষ্টা আর দুর্নিবার আগ্রহ থাকলেই চলতে চলে না। তার জন্য দরকার বিশেষ লক্ষ্য, বিশেষ গন্তব্যের। গন্তব্যে মানুষকে পৌঁছার জন্য অগণিত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করতে হবে জীবনচরিত সেখানে প্রেরণা যোগায়। বর্তমান বিশ্বে স্বার্থপরতা হিংসা-বিদ্বেষ, ক্ষুদ্রতা-তুচ্ছতায় পরিপূর্ণ। মানবতা এখন বিপন্ন। পৃথিবী বাসযোগ্য করার জন্য মানুষের চিত্তশুদ্ধি একান্ত প্রয়োজন। ক্ষুদ্রতা, তুচ্ছতা নিয়ে ধূলিমলিন পৃথিবীতে মানুষ ঘর বাঁধে। সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি, স্বার্থগ্লানিময় দৈনন্দিন জীবন, কুসংস্কারাচ্ছন্ন মন-মানসিকতার মধ্যে মহামনীষীগণের জীবনের আলো এসে পড়লে জীবন হয়ে ওঠে আলোকিত। জীবন এগিয়ে চলে সাফল্যের দিকে। মানুষ তখন স্বার্থমগ্নতার সীমা বেষ্টনী থেকে মানবতার আলোকিত উদার উন্মুক্ত জীবনের সীমানায় আগমন করে। মহৎ মানুষের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সাধারণ মানুষ যেন নব জন্ম লাভ করে।



No comments:

এইটুকুতেই আমাদের হয়ে যাবে, আর লাগবে না

এইটুকুতেই আমাদের হয়ে যাবে, আর লাগবে না বিবেক সম্পন্ন মানুষ হওয়ার প্রয়োজনে শিক্ষা গ্রহণের জন্য মোটা মোটা পুস্তক আর বড় বড় অট্টালিক...