google-site-verification: google3e58058dabcd012d.html পয়ন্তপ : মৃত্যুর হোলিখেলায় মেতে জীবনকে অন্ধগলিতে প্রবাহিত করে ছাত্রসমাজ

মৃত্যুর হোলিখেলায় মেতে জীবনকে অন্ধগলিতে প্রবাহিত করে ছাত্রসমাজ



মৃত্যুর হোলিখেলায় মেতে জীবনকে অন্ধগলিতে প্রবাহিত করে ছাত্রসমাজ



মৃত্যুর হোলিখেলায় মেতে জীবনকে অন্ধগলিতে প্রবাহিত করে ছাত্রসমাজ
ডারউইনের বিবর্তনবাদ থেকে জানা যায়, মেরুদণ্ডহীন নীচু শ্রেণীর প্রাণীই শত কোটি শতাব্দীর ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে আজকের উন্নত মেরুদণ্ডী মানবে পরিণত হয়েছে। আর এই উন্নত সৃষ্টিকে উন্নততর করেছে শিক্ষা। শিক্ষাহীন মানব মেরুদণ্ডহীন আদিম জীবেরই নামান্তর। দেহকে সংহত, সমুন্নত, কর্মক্ষম করে মেরুদণ্ড, আর মনকে সংহত, সমুন্নত ও কর্মক্ষম করে শিক্ষা। শিক্ষা পরিবারকে করে শিষ্টাচার, মানুষকে করে প্রজ্ঞাবান আর জাতিকে করে সভ্য। এই মেরুদণ্ডকে সুস্থ সবল রেখে শক্তিশালী করার জন্য পৃথিবীর সমস্ত রাষ্ট্রেই রয়েছে নিদিষ্ট প্রতিষ্ঠান। যার নামকরণ করা হয়েছে শিক্ষালয় বা শিক্ষাঙ্গণ।
এই শিক্ষালয়গুলো প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরে শেষ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মানুষ শিশুকাল থেকে তরুণকাল পর্যন্ত কাটিয়ে থাকে মানুষ হওয়ার জন্য।
মানুষ গড়ার কারিগরেরই আরেক নাম শিক্ষক
কেউ কেউ মানুষ হয়ে কর্মজীবন হিসেবে বেছে নেয় শিক্ষালয়ে শিক্ষাদানকে। আর তাদেরই বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। এই কারিগরেরই আরেক নাম শিক্ষক। ইংরেজীতে বলা হয় Teacher। শিক্ষক বা Teacher হলো মানুষ গড়ার একমাত্র কারিগর। অ-আ, ক-খ, A-B-C, 1-2-3 ইত্যাদি বর্ণমালার মাধ্যমে হাতেখড়ি দিয়ে পুঁথিগত জ্ঞান দানের শেষ ধাপ পর্যন্ত শিক্ষক শিক্ষা দানের মাধ্যমে মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। আর সেই মানুষই দেশের সুস্থ-সবল-মেরুদণ্ড। শিক্ষালয়ের প্রাণ হলো শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। শিক্ষাঙ্গণই জ্ঞান চর্চার অঙ্গন। এই অঙ্গন গড়ে তোলে জাতির ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ও সম্ভাবনা। তাই তো এই শিক্ষাকে কেন্দ্র করে যুগে যুগে, দেশে দেশে কতই না পরিকল্পনা। আমাদের দেশেও এ পরিকল্পনা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছেই। কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাণহীন, সংকীর্ণ ও গতানুগতিক হয়ে পড়েছে। বস্তুত যখনই কোন কিছু গতিহীন হয়ে পড়ে, তখনই দেখা দেয় ক্লেদ ও দৈন্য। আজ আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে যে অবস্থা দেখা দিয়েছে, তার স্বরূপ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে শিক্ষার ভিত পুরোটাই ধসে গেছে।
মৃত্যুর হোলিখেলায় জীবনকে অন্ধগলিতে প্রবাহিত করে
বর্তমানে শিক্ষার প্রতি স্তরে যে বিশৃংখলা ও শিক্ষার্থীদের উচ্ছৃঙ্খলতার প্রভাব বিস্তার করছে এর মূল কারণ বিশ্লষণ করা একান্ত প্রয়োজন। কোন বিবেকবান মানুষ যদি দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবেন, ভাবেন ছাত্রসমাজ নিয়ে তাহলে তাঁর চোখের সামনে আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক এবং শিক্ষাঙ্গণের সংকট ভাসবে। এই সংকট যেমন গভীর তেমনি বিস্তৃত, জটিল ও বহুমুখী। যে সময় জীবন গঠনের, চরিত্র গঠনের, ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের প্রস্তুতি গ্রহণের সে সময়ই আমাদের তরুণেরা আদর্শগত বৃত্তি পরিহার করে ছুটছে অনিশ্চিত ভয়ংকর পথে। যে পথের কোন নিশ্চয়তা নেই, যে পথটি কঠিন ও বন্ধুর, যে পথে মৃত্যুর হোলিখেলা খেলে জীবনকে এমনি একটি অন্ধগলিতে প্রবাহিত করে যুবক বিভ্রান্ত করছে সমাজকে, কলুষিত করছে গোটা শিক্ষাঙ্গণ তথা দেশকে, অপবাদের কালিমায় লেপন করে দিয়েছে উজ্জ্বল ভবিষ্যতাকাঙ্ক্ষী সমগ্র তরুণকূলকে। অথচ ছাত্রসমাজই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার।
ভবিষ্যতে তারা দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতির দায়িত্ব বহন করবে, দেশ ও জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করবে এবং জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব করবে। গড়ে তুলবে জাতির ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ও সম্ভাবনা। সেই ছাত্রসমাজ আজ বিপর্যস্ত। জাতির দুর্যোগময় মুহূর্তে ছাত্রসমাজই বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে বলে ইতিহাস সাক্ষী দেয়। এর উদাহরণের জন্য দূরের কোন দেশের দিকে তাকাতে হবে না। নিজের দেশের দিকে তাকালেই দেখতে পাই ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। অথচ আমরা দেখছি ছাত্ররাজনীতির নামে হীন অর্থে এই ছাত্র তরুণসমাজকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষাঙ্গণের পবিত্র মাটিতে কলঙ্ক লেপন করে যাচ্ছে।
শিক্ষাঙ্গণে মেধাবী শিক্ষক মেলে না
সবাই আজ জীবনের চাহিদার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। আর শিক্ষা ক্ষেত্রেও তার প্রতিফলন দেখা দিয়েছে। শিক্ষা সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সবকিছুকেই সমান মূল্য দিতে হবে। একজন শিক্ষকের মূল্য একজন ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার কিংবা ঊর্ধ্বতন সরকারী চাকরিজীবিদের চেয়ে কম বলে বিবেচিত হয়, তবে শিক্ষক হবার আগ্রহ একে একে কমে আসবে। আজ এই সমস্যা প্রবল রূপ ধারণ করছে শিক্ষাঙ্গণের সাথে সাথে সমাজে নানা স্তর। শিক্ষাঙ্গণে মেধাবী শিক্ষক মেলে না। কারণ তাঁদের পেট ভরে অন্ন জোটে না। মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে তাঁরা ছুটছে বিকল্প পথে। করছে কোচিং, হচ্ছেন প্রাইভেট টিউটর। কেননা, জাতীয় জীবনে শিক্ষদের গুরুত্ব অপরিসীম হলেও ব্যক্তিজীবনে তাঁরা ভুগছেন আর্থিক দৈন্যতায়। আর তাঁদেরই বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর।বাস্তবতাকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই, কারণ তাঁরাই মানুষ গড়ে থাকেন। তাই বলে কি সব মানুষই মানুষের সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত মানুষ হয়? হয় না, হতে পারে না! কোন দিন হবেও না! তাই বলে সব দায়ভার শিক্ষক নামক কারিগরের উপর বর্তাতে পারে না।দেশের দায়িত্ব ও কর্তব্য কেবলমাত্র শিক্ষকদের কাঁধে চাপিয়ে কোন জাতি গা ভাসিয়ে দিতে পারে না।
মৃত্যুর হোলিখেলায় মেতে জীবনকে অন্ধগলিতে প্রবাহিত করে ছাত্রসমাজ



শিক্ষা দিবস বা শিক্ষা সপ্তাহ পালন করা হয় অনেকটা ঘটা করে, হয়ে থাকে কত রকমের সভা-সমাবেশ। সভা-সমাবেশে একই উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় মন্ত্রিমহল, দেশের গণ্যমান্য বাক্তিবর্গ এবং রাজনীতিবিদগণ। বক্তব্যে একটি মাত্র মূল কথা থাকে, “শিক্ষকদের রাজনৈতিক সমস্যার ঊর্ধ্বে থেকে শিক্ষাঙ্গণকে সমস্ত কলুষমুক্ত করে সুস্থ-সবলীল শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষদের আরো তৎপর হতে হবে।” যারা এধরণের বড় বড় বক্তৃতার মধ্য দিয়ে সেই মুহূর্তেই শিক্ষাঙ্গণের সমস্ত সংকট মুছে ফেলেন খুব সহজভাবে। আমি তাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়তে চাই- ছাত্রদের ছাত্ররাজনীতির নাম করে সন্ত্রাসীনীতিতে পরিণত করেছে কারা? শিক্ষাঙ্গণে কলমের বদলে অস্ত্র তুলে দিয়েছে কারা? শিক্ষাঙ্গণে সংকট সৃষ্টিকারী কারা? ছাত্রদের নিয়ে অস্ত্রের হোলিখেলায় মেতে উঠছে কারা? ধীরে ধীরে এ খেলার জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে, থামানো ভাবনা কেউ ভাবছে না । বরং এখন স্কুল-কলেজেও অস্ত্রবাজীর দক্ষ খেলোয়াড় তৈরী হচ্ছে। কি হচ্ছে? কেন হচ্ছে? কারা করাচ্ছে? যারা করাচ্ছে তারা কারা? যারা আস্ত্রের নাটাই হাতে নিয়ে ঘুড়ি উড়াচ্ছে তাদের সন্তান কি দেশের শিক্ষাঙ্গণে আছে? এসব প্রশ্নের উত্তর দেশের ঊর্ধ্বতন মহল না দিতে পারলেও সাধারণ মানুষ কিন্তু একটি প্রশ্নের উত্তরও ভুল দিবে না।আজ স্কুলের ছাত্র শিক্ষক মেরে ফেলছে, স্কুলের ছাত্ররা খুনসহ যে কোন জঘন্য কাজ করতে পিছপা হয় না। এসবই কি শিক্ষকরাজনীতির প্রভাবের কারণ? ব্যাপারটা এমন যে, আমাদের দেশে সন্তান নষ্ট হয়ে গেলে মায়ের দোষ দেয়া হয়ে থাকে, আর সন্তান সুসন্তান হলে বাবার সুনাম বাতাসে ভেসে বেড়ায়।
সর্বক্ষেত্রে শিক্ষার শ্রেণী বৈষম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় সকল উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুষ্টিমেয় ছাত্র নামধারী ব্যক্তিদের অস্ত্রবাজের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। সন্ত্রাসবাদী ছাত্রদের জন্য সকল প্রশাসন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষার পরিবেশ কলুষিত হয়ে পড়েছে। শক্তিশালী মহলের আর্শীবাদ পুষ্ট হয়ে সন্ত্রাসীরা শিক্ষাঙ্গণকে সন্ত্রাসের লীলাভূমিতে পরিণত করেছে। পরিণত করেছে অর্থ-বিত্ত-প্রতিপত্তি অর্জনের ক্ষেত্র হিসেবে। এসব সন্ত্রাসীর খুঁটির জোর এমনই যে তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ। কেন এমনটি হচ্ছে? কিসের জন্য হচ্ছে? শিক্ষাঙ্গণে সন্ত্রাস আমাদের সাধারণ ছাত্রসমাজকে শক্তিহীন, প্রতিবাদহীন করেছে, পরিণত করেছে বিবেকহীন, মনুষ্যত্বহীন পেশীবাজে। জাতীকে ঠেলে দিচ্ছে নৈতিকতাহীন পেশীশক্তি নির্ভর এক অন্ধকার ভবিষ্যতের শেষ পরিণতির দিকে। এর মূলে কি শুধুই শিক্ষক? শিক্ষকের কি স্বাধীন সত্তা আছে যে, শিক্ষার্থীদের অধিনস্ত করে রাখা? আদর্শ-নীতিতে মানুষ গড়ে দক্ষ কারিগর হওয়ার?
কোন শিক্ষকই শিক্ষালয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম নয়। তাঁরাও প্রত্যেক্ষ কিংবা পরোক্ষ রাজনৈতিক শিকার। কোন শিক্ষক ইচ্ছে করলে তাঁর নীতিকে ধরে রাখতে পারে না রাজনৈতিক এবং প্রভাবশালী মহলের চাপের কারণে। আবার এর ব্যতিক্রমও আছে যারা ইচ্ছে করে নিজেরাও জড়ায় নোংরানীতিতে। যারা সভা-সমাবেশে বক্তিতায় রস দিয়ে, আনন্দ- উচ্ছ্বাসের মাধ্যমে বক্তব্যে দিয়ে সত্য সমস্যা তুলে ধরে, তেমনি অন্তরালে অস্ত্র হাতে তুলে দেয়। যাকে বলে গাছের আগায় পানি দিয়ে গোঁড়া কাটা।
দ্বন্দ্ব ও অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে আজ কেড়ে নিচ্ছে সবুজ প্রাণ
শক্তি, সাহস, উদ্যাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও মায়া-মমতার প্রতিক হলো তরুণসমাজ, যুবসমাজ, তথা ছাত্রসমাজ। তারাই দেশ গড়ার কাজে আশা-ভরসা এবং হাতিয়ার। তারাই দেশের জাতীয় উন্নতি ও অভ্যূদয় নিশ্চিত করতে পারে। অন্যায়ের প্রতিরোধ করে দুর্বলের পাশে দাঁড়িয়ে সাহস, শক্তি ও জ্ঞানের আলো বিতরণ করে ছাত্রসমাজই দেশ গঠনের মহান ভূমিকা পালন করতে পারে। আর এর জন্য প্রয়োজন ছাত্রজীবনে বিশুদ্ধতা, ত্যাগ-তিতিক্ষা, একাগ্রতা ও একতার। কিন্তু আমাদের ছাত্রসমাজ হচ্ছে ঠিক এর উল্টো। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী, খুন-খারাবী ও আস্ত্রবাজী ইত্যাদি নৈরাজ্যমূলক কাজে পরিপূর্ণভাবে বিস্তার করছে। এসব করাচ্ছে কোন না কোন প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক মহল। তাদের ছত্রচ্ছায়াই ছাত্রসমাজ লালিত-পালিত হয়ে থাকে। দেশের ছাত্রসমাজ যুবসমাজকে গড়ে তোলছে সন্ত্রাসী সমাজ।ফলশ্রুতিতে ছাত্ররা প্রকৃত পরিচয় ভুলে গিয়ে নিজেদের কোন প্রভাবশালী-রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় দেখতে বেশি পছন্দ করছে।
আর রাজনৈতিক সংগঠনের স্বার্থপ্রিয় নেতারা ছাত্রদের দ্বারা নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়াতে ব্যস্ত। ছাত্রদের ইচ্ছা ও অনিচ্ছার উপর রাজনীতির দায়ভার চাপানো হয়। কেউ যদি এতে মতভেদের সৃষ্টি করে তাহলে দেখা দেয় অন্তর্দ্বন্দ্ব। দ্বন্দ্ব ও অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে আজ কেড়ে নিচ্ছে সবুজ প্রাণ। অথচ, জ্ঞান অর্জন, আত্মশক্তি লাভ, চরিত্র গঠন ও সমাজ জীবনের বাস্তবতার মুখোমুখি হবার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতিই ছাত্রজীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। জ্ঞান অর্জনের সাথে সাথে তাদের কর্তব্য দেশের সেবা করার জন্য নিজেকে গড়ে তোলা। কিন্তু সন্ত্রাস সৃষ্টিকর্তারা ছাত্রদের এই সকল কর্মকান্ড থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। এতে অস্ত্রবাজ ছাত্রের পরিবারই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না শুধু সেই ছাত্রটি কিংবা ছাত্রসমাজ। ক্ষতিগ্রস্ত বলবো না বলবো ধ্বংস হচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীন সার্বভৌম আমাদের দেশে। প্রভাবশালী কিংবা রাজনৈতিক মহলের কবলে পরে আমাদের জাতির মেরুদণ্ড আজ একেবারে কুঁজো হয়ে গেছে।
রাজনীতিবিদদের ক্ষমতায় আরোহণের একমাত্র মাধ্যম যেখানে সন্ত্রাস, সেখানে সন্ত্রাস সৃষ্টি হবেই। সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৯০% সন্ত্রাস তৈরী হচ্ছে শিক্ষাঙ্গণ থেকে। বিশেষ করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সন্ত্রাস নামক ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে দেশ ও জাতির উন্নতির পথ রুদ্ধ হয়ে আছে। শিক্ষাঙ্গণ আজ সন্ত্রাসীছাত্রদের হাতে বন্দী। রাজনৈতিক মহল এবং শীর্ষমহলের গডফাদার অক্টোপাস হয়ে সন্ত্রাস নামক ছাত্রসমাজকে নিজের করে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে। তাই শিক্ষাঙ্গণ জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন স্বরূপ কোন যোগ্য নাগরিক উপহার দিতে পারছে না। একজন ছাত্র শিক্ষাঙ্গণে যাচ্ছে শিক্ষা গ্রহণের জন্য ফিরে আসছে অন্যের কাঁধে করে রক্তরঞ্জিত লাশ হয়ে। দেশ পরিচালক-কর্ণধাররা নিশ্চয় বলবেন না, এসবই হচ্ছে শিক্ষাপ্রশাসনের দুর্বলতার কারণে। তবে হ্যাঁ, শিক্ষা প্রশাসন কিংবা শিক্ষকদের দুর্বলতাগুলো অস্বীকার করা যাবে না। এই দুর্বলতার কারণ কিন্তু শিক্ষা প্রশাসনের, প্রশাসনের তথা দেশ প্রশাসনের। দেশ প্রশাসনই শিক্ষা প্রশাসনকে দুর্বল করে রেখেছে নিজেদের সবল করার জন্য।
শিক্ষাঙ্গণকে নিয়ে কাঁছিটান খেলায় মেতে আছে
আজ যদি জাতির শিরদারা থাকতো তাহলে দেশ সেবার নামে দেশ শোষণ করে দেশ ও জাতিকে মস্তকহীন করতে পারত না। করতে পারত না যুবসমাজ তথা ছাত্রসমাজকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে এনে দাঁড় করাতে। এসবই জাতির দূর্ভাগ্য। তাই তো দেশের সাধারণ মানুষ সব বুঝেও সব জেনেও কিছুই করতে পারেনা। কারণ কার বিরুদ্ধে করবে(!) কিসের মাধ্যমে করবে(!) যারা দেশ পরিচালনা করেছে বা করতেছে এরা সবাই ছাত্রসমাজ নিয়ে দাবা খেলায় মেতে রয়েছে। দাবার গুটির মতো এখান থেকে ওখানে, ওখান থেকে এখানে চাল দিয়ে রাজা চেক দিচ্ছে। আর জাতির আইন তো তাদেরই। তাই তো দেশের সাধারণ নাগরিকেরা নিরব-নিথর। সন্ত্রাসীদের কারণে মানুষ আতঙ্কিত কিন্তু যারা ছাত্রসমাজ তথা শিক্ষাঙ্গণকে নিয়ে কাঁছিটান খেলায় মেতে আছে, গায়ের জোর যার যত বেশী সে ততবেশী নিজের দিকে টেনে আনছে, (অবশ্য এখানে অর্থ এবং পদের জোর বিরাট অবধান রাখছে)।
তাদের ভয়ে মানুষ বাকরুদ্ধ প্যারালাইসিস রোগীর মতো পঙ্গু হয়ে বিছানায় শায়িত হয়ে পড়েছে। তারা দেখছে তাদের কত কষ্টের আকাঙ্খিত ফসল অঙ্কুরেই ঝড়ে যাচ্ছে কালবৈশাখীর নির্দয় আচমকা বাতাসে। কিন্তু কিছুই করতে পারছে না। ছল ছল চোখে, কাঁপানো ঠোটে কি যেন বলতে চায়, শত চেষ্টায়ও তা সফল হচ্ছে না। তারা সফল হতে না পারলেও সফল হচ্ছে অনেক মহল। তাদের সফলতাও নিশ্চয়ই একদিন ব্যর্থ হবে। কারণ বিশ্বের দরবারে আমাদের দেশের কিছু কিছু দিগের সুনাম থাকলেও ছাত্রসমাজে রাজনীতির দূর্নাম রয়েছে। একদিন না একদিন আমাদের ছাত্রসমাজ ধ্বংস হতে হতে শেষ প্রান্তে গিয়ে রুখে দাঁড়াবেই। হয়ত সেই দিন আর খুব বেশি দূরে নয়। তখন সকল রাজনীতিবিদগণ পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পবে না, সভা-সমাবেশ করে সমাজ সেবক হিসেবে জাহির করার জন্য। থাকবে না কেউ তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখার জন্য। জ্বী বস, ইয়েস বস বলে বসদের অর্ডারের অপেক্ষায় কেউ থাকবে না। তখন শ্লোগান হবে “নিজে বাঁচলে বাপের নাম”।
সন্ত্রাস সৃষ্টিকর্তারা একটু তাকিয়ে দেখুন, সাধারণ জনগণও কখনো কখনো পুলিশের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারীদের আগুনে পুড়িয়ে মারছে, উপড়ে ফেলছে চোখ। তাঁরাও প্রতিবাদী হয়ে উঠছে মাঝে মধ্যে। একদিন এই প্রতিবাদী হাত ও মনোবল আরও কঠোর এবং শক্তিশালী হবে, তখন ছিনতাইকারীদের মতো অবস্থা হবে সন্ত্রাস সৃষ্টিকর্তাদের। পরিশেষে আমার এই লেখার মাধ্যমে আমি তাদেরই আহবান করব যাঁরা এই অসহায় জাতির সুনাগরিক সাধারণ মানুষ তাদের। আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে, চুপ করে থাকার সময় শেষ হয়ে গেছে। দেশ ও জাতির পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, এক হয়ে প্রতিবাদ করুন, জেগে উঠুন আপনারা। সব কিছু পরিচ্ছন্ন করে আমাদের ছাত্রকলঙ্কিত জাতির কুঁজো মেরুদণ্ডকে সোজা, সুস্থ, সবল ও শক্তিশালী করে নতুন ভাবে গড়ার দায়িত্ব আমার-আপনার সবার। তাই নয় কি?

No comments:

এইটুকুতেই আমাদের হয়ে যাবে, আর লাগবে না

এইটুকুতেই আমাদের হয়ে যাবে, আর লাগবে না বিবেক সম্পন্ন মানুষ হওয়ার প্রয়োজনে শিক্ষা গ্রহণের জন্য মোটা মোটা পুস্তক আর বড় বড় অট্টালিক...